চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা - ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম
আপনি কি চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা বা ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম খুঁজছেন? আপনি যদি চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা বা ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম খুজে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমরা এই নিবন্ধনটির মাধ্যমে দেখিয়েছি চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা বা ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে।
আমাদেরকে বিভিন্ন প্রয়োজনে চিঠিপত্র লিখতে হয়। বর্তমানে আমাদেরকে এই চিঠিপত্র পরীক্ষায় লিখতে হয় তাই আমাদের জানা উচিত যেটা লেখার নিয়ম বাংলা বা ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে। আমরা যখনই চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা বা ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম জানব তখনই আমরা খুব সুন্দর ভাবে একটি চিঠি বা ব্যক্তিগত পত্র লিখতে পারবো। আর আমরা যত সুন্দর ভাবে ব্যক্তিগত পত্র লিখবো তত বেশি নাম্বার পাব সব জায়গায়।
evvtv
পত্র লিখন সম্পর্কিত প্রাথমিক আলোচনা
পত্র অর্থাৎ চিঠি বা লিপি। মানুষ তার ভাব বিনিময় এবং সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য সুপ্রাচীনকাল থেকে যে মাধ্যমটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব ও সহকারে ব্যবহার করে আসছে তা হচ্ছে পত্র। আধুনিক যন্ত্র সভ্যতার যুগে টেলিফোন টেলিভিশন সংবাদ পৌঁছানো ও ভাব বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে গড়ে উঠছে। অতি সম্প্রতি কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা যুগান্তকারী ঘটনার জন্ম দিয়েছে। কিন্তু পত্র লেখার প্রয়োজনীয়তা এরপর একেবারে ফুরিয়ে যায়নি। ডাক বিভাগ পত্র যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ বৃহত্তম সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা
আমরা পূর্বেই বলেছি সুপ্রসীন কাল থেকে মানুষ সংবাদ বিনিময় আদান-প্রদান ও ভাব বিনিময়ের জন্য চিঠিপত্রের ব্যবহার করে আছে। বাংলা ভাষার মধ্যযুগের ইতিহাস পরিচালনা করলে দেখা যায় ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে কুচবিহার রাজা নারায়ন অহোম সর্বদেব কে যে পত্র লিখেছিলেন তা তখন পর্যন্ত প্রাপ্ত বাংলা গদ্যের প্রাচীনপত্রের নমুনা। সে যুগের রাজা বাদশারা আজকের দিনে মতই প্রত্যেককে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতেন। যেমনঃ
লেখা নং কার্যাষ। এথা আমার কুশল। তোমার কুশল নিরন্তর ব্যঞ্জন করি। তখন তোমার আমার সন্তোষ সম্পাদক পাত্রাপত্রি কোথায়য়াত হইলে উভয়ানু কুল প্রতির বীজ অঙ্কুরিত হইতে রহে। তোমার আমার কর্তব্য সে বর্ধিত পাই পুষ্পিত ফলিত হইবক। আমারা উদ্যোগত আছি। তোমাকে এই গোট কর্তব্য উচিত হয়। না কর তাক আপনে জান। অধিক কি লেখিম।
পত্র যদি সুলিখিত হয় তাহলে তা সাহিত্যক মর্যদা পায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছিন্ন পত্র এমনি একটি দৃষ্টান্ত। ইংরেজি রোমান্টিক কবি কিট্স-এর প্রেমিকাকে লেখা পত্র গুলো বিশ্ব সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। পত্রাকারের কেউ কেউ উপন্যাসও লিখে থাকেন। যেমন- ইংরেজি সাহিত্য রিচার্ডসনের পামেলা এমনি একাটা রচনা। বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রাথ ঠাকুর ‘স্ত্রী পত্র’ নামে পত্রকার একটি ছোট গল্প লিখেছেন- যা বিশ্ব সাহিত্যের মার্যদা লাভ করেছে। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মানুষ যেসাব পত্র লিখে তাকে তা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। নিম্নলিখিতগুলোই প্রধান।
১। ব্যক্তিগত পত্র
২। আবেদন পত্র বা দরখাস্ত
৩। ব্যবসায়-বাণিজ্য সংক্রান্ত
৪। নিমন্ত্রণ পত্র
৬। পত্রিকা প্রকাশোপযোগী পত্র
৭। স্মরকলিপি
৮। সিহিত্যিক পত্র।
চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা - ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম
ব্যক্তিগত পত্র অর্থ অর্থৎ নিজের বা ব্যক্তিগত কারণে যে চিঠি/পত্র লেখা হয়। পিতামাতা, ভইবোন, আত্বীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব,এমনকি পরিচিত ব্যক্তির কাছে লিখত পত্রকে ব্যক্তিগত পত্র বলে। এ জাতীয় চিঠিপত্রে ব্যক্তি জীবনকে সুখ-দক্ষ প্রেম ভালবাসা আনন্দ-বেদনার চিত্র ফুটে ওঠে। ব্যক্তি জীবনের নানা সমস্যার কোথাও এসব চিঠিতে স্থান পায়। জীবনের বিচিত্র বিষয়ে সঙ্গে রেখে ব্যক্তিগত পত্র হয়ে উঠে আরও বৈচিত্র্যময়।
অভ্যন্তর ভাগ - চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা
মঙ্গলচারণঃ পত্রের উপরিভাগ সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরণ করে কথা লেখার যে প্রচলন তাকে মঙ্গলচরণ বলে। মুসলিম রীতিতে আল্লাহু আকবার এলিহি বর্ষা খোদা ফর্সা যিয়ারব ৭৮৬ বিসমিল্লাহির রাহিম রহমানির রহিম প্রভৃতি লেখা হয়ে থাকে। তবে আধুনিককালে এ জাতীয় কথা লেখার প্রচলন ক্রমশ উঠে যাচ্ছে।
ঠিকানাঃ পত্র প্রেরক পত্রের উপরিভাগের ডানকুনি ঠিকানা লিখে থাকেন। সাধারণত এই জাতীয় ঠিকানা সংক্ষিপ্ত আকারে লেখা হয়। তবে পত্র পেয়েও যদি প্রেক্ষাপটের অপরিচিত হন তাহলে পূর্ণ ঠিকানায় লেখা উচিত। ঠিকানা শেষ পত্র লেখার তারিখ ও অনেকে লিখে থাকেন।
সম্ভাষণঃ যাকে পত্র লেখা হচ্ছে তার মর্যাদা উল্লেখই সম্ভাষণ। পত্র গর্ভের উপর এ সম্ভাষণ করতে হয়। শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে পাকজনাবেষু (মুসলিম রীতি ) প্রতিটি লিখতে হয়। সমবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রিয়বরেষু, প্রীতিভাজনেষু প্রভৃতি লেখা হয়। কল্যাণীয়েষূ প্রভৃতি লিখতে হয়। লক্ষ রাখতে হবে এষু-প্রত্যয় পুংলিঙ্গে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং প্রাপক যদি নারী হন তাহলে আসু যোগ করতে হবে।
পত্রগর্ভঃ পত্র গর্ভ দুই ভাগে বিভক্তি হয়। প্রথম অংশ পত্র লেখককে সালাম, প্রণাম, জনাব, কুশল বিনিময় করবেন, এরপরের পত্রের মূল অংশ শুরু হবে। রতের লেখক সমুদয় বক্তব্য পত্রগর্ভের এ অংশে পরিবর্তন করবেন।
বহির্ভাগ - ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম
শিরোনামঃ পত্রের বহির্ভাগকে শিরোনাম বলে। পত্রলেখা শেষ হলে লিখিত পত্রটি খাম এটা খামের উপর প্রাপকের পুরো নাম ও ঠিকানা লিখতে হয়। নাম ও ঠিকানা লেখার ক্ষেত্রে খুবই যত্নবান হওয়া উচিত। নামও ঠিকানা সম্পূর্ণ না হলে এর প্রেপকে হাতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা খুবই কম। নিচে একটি নমুনা দেওয়া হলঃ
বর্তমানে ডাক বিভাগ কর্তৃক সরবরাহকৃত খামে প্রাপকের ঠিকানা কামের উপর পৃষ্ঠায় লেখার বিধান চালু করা হয়েছে। এছাড়া কোড নাম্বার ব্যবহারের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আলোচনায় আমরা ব্যক্তিগত পত্রের যে মৌলিক ছয়টি অংশের উল্লেখ করেছি এই মৌলিক অংশগুলো প্রায় সব পত্রের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে পত্র ভেদে এই অংশগুলো স্থান পরিবর্তন হতে পারে।
চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা নমুনা
মনোভাব ভক্ত করে বন্ধ নিকট পত্রর একটি নমুনা। চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা নমুনা দেখে আপনি খুব সহজেই একটি চিঠি তৈরি করতে পারেন।
নওগাঁ রাজশাহী
26/02/2024
প্রিয়______
আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। তোমার চিঠি পেলাম। তুমি জানতে চেয়েছ তৃতীয় স্মৃতিসৌধ দর্শনাধ্যে আমার মনোভাব কেমন হয়েছিল। সম্প্রতি জাতীয় স্মৃতিসৌধ দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। আবার সেই আনন্দ মনোভাবটাই তোমাকে লিখে জানাছি।
ঢাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সাভারে এই স্মৃতিসৌধ অবস্থিত। তুমি তো জানোই বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশকে কত মূল্য দিতে হয়েছে। ৩০ লক্ষ শহীদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। সেই অমর শহীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য এই স্মৃতিসৌধ।
একটি বিশেষ স্থাপত্য নকশাই এই স্মৃতিসৌধ তৈরি হয়েছে। স্বাধীনতার তাৎপর্য বা হোক লাল সিরামিক হোটেলের সমগ্র এলাকা মূল্য সাথে সাতটি অংশ সামনে থেকে দেখলে অখন্ড বলে মনে হয়।
স্মৃতিসৌধ সুন্দর বাগানের সাজানো; দেখতে অপূর্ব। কিন্তু এখানে এসে দাঁড়ালে দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মহতি দানকারী অমর শহীদের কথা মনে পড়ে। শ্রদ্ধেয় অবনত হয়ে আর সেই হৃদয়। স্মৃতিসৌধ জাতীয় জীবন প্রেরণের উৎস। আজ এই পর্যন্ত লিখেই তোমার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। চিঠি লিখো।
ইতি
তোমার বন্ধু
ইমন
আরো পড়ুনঃ ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
কন্যের কাছে পিটার চিঠি - চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা
২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪
নওগাঁ, রাজশাহী
স্নেহের প্রাপ্তি
আমার আশীর্বাদ নিও। আশা করি ভালো আছো।
গত চিঠিতে তোমার প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল জেনেছি। প্রায় সবগুলো বিষয়ে ভালো করেছো। গণিতে খানিকটা কম নাম্বার পেয়েছ। এতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। গণিতের কোন বিষয়গুলো বুঝতে এখনো সমস্যা হচ্ছে তা আগে সনাক্ত কর। প্রয়োজনে তোমার ক্লাসের গণিত শিক্ষকের সহযোগিতা নাও। মুখস্থ না করে বুঝে পড়ার চেষ্টা করো।
নির্বাচনী পরীক্ষা আর এস এস সি পরীক্ষা খুব দেরি নেই। তাই এই সময়টা খুবই ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে। পরীক্ষা শিক্ষাজীবনের একটি অংশ। তাই পরীক্ষা কে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই সময় কিভাবে সুস্থ থেকে নিয়ম অনুযায়ী পড়াশোনা করা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখো। বেশি রাত জাগো না, যথা সময়ে খাবার খেয়েও। আমারা বাসার সবাই ভালো আছি।
ইতি
তোমার বাবা
অনিরুদ্ধ রায়
ইমেইলে পাঠানোর জন্য ঠিকানা ও বিষয়ে
আমাদের শেষ কথা
আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম চিঠি লিখার নিয়ম বাংলা এবং ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম। কোথাও যদি আপনার বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন কারণ আমরা প্রত্যেকের কমেন্ট রিভিউ করি। এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করবেন। কারন এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা প্রতিদিন আপলোড করে থাকি। এবং অবশ্যই আপনি নিজেই পাশে তথ্য চান সেই বিষয়ে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন তাহলে আমরা সেই বিষয়ে আপনাকে জানাবো। আমাদের সঙ্গে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আরো পড়ুনঃ মাদকাসক্তির কারণ ও প্রতিকার রচনা
ইভিভিটিভি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url