আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা সর্বোচ্চ মার্ক নিশ্চিত

আপনি কি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা অথবা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা রচনার বিষপয়েন্ট সম্পর্কে জানতে চান? আপনি যদি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা খুজে থাকেন সর্বোচ্চ মার্ক নিশ্চিত করার জন্য তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা
আমরা এই নিবন্ধনটির মাধ্যমে কিভাবে আপনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা লিখে সর্বোচ্চ মার্ক নিশ্চিত করতে পারে সেই বিষয়ে তুলে ধরেছি। তাই আপনি যদি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা লিখে সর্বোচ্চ মার্কিন নিশ্চিত করতে চান তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
evvtv

ভূমিকাঃ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা

আমরা এই নিবন্ধনটির মাধ্যমে যেহেতু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা লিখে কিভাবে আপনি সর্বোচ্চ মার্কেট নিশ্চিত করতে পারেন সেই সম্পর্কে আলোচনা করেছে। সেহেতু আপনার মনে এখন প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে আপনি এই নিবন্ধনটি পড়ে সর্বোচ্চ মার্কেট নিশ্চিত করতে পারেন।

আপনি যদি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা লিখে নিশ্চিত করতে চান তাহলে প্রথমে আপনি এই নিবন্ধনটি বা এই রচনা সম্পূর্ণ পড়বেন। এরপর আপনি সম্পূর্ণ পড়ে ভালোভাবে মুখস্ত করেও নিতে পারেন।

এরপর আপনি নিচে যেভাবে আমরা সাজিয়েছি সেভাবে আপনি আপনার পরীক্ষায় খাতায় অথবা যেকোনো প্রতিযোগিতায় আপনি এই রচনাটি লিখতে পারলে আপনি সর্বোচ্চ মার্ক পেতে পারেন। আপনি যদি নিম্নলিখিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনাটি সম্পূর্ণভাবে মুখস্থ করে যেকোনো পরীক্ষায় এই বিষয়ে আসলে আপনি এই বিষয়টি বা এই রচনাটি লিখে সর্বোচ্চ মার্ক পাবেন।

তবে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মার্কেট নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই আপনার হাতে লেখা ভালো হতে হবে। চলুন তাহলে বেশি দেরি না করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা 20 পয়েন্ট সম্পর্কে জেনে নিন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ‍দিবস রচনা


আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

ভূমিকাঃ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।” একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনের এক গৌরব ময়ূর ও ঐতিহ্যবাহী দিন। বাঙালির জাতীয় জীবনের সকল চেতনার উৎসাহ হচ্ছে এই দিনটি। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষায় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার ঐতিহাসিক দিন এটি।

বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার হ ঐতিহাসিক দিন এটি। 1952 সালের 21 শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য জীবন দিয়ে বাঙালি অন্যান্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাঙালি রক্তঝরা এই দিনটিকে সারা বিশ্বের স্মরণীয় করে রাখতে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সম্মান জানিয়েছে ভাষা শহীদদের প্রতি।

তাই একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবময়ী ও ঐতিহাসিক দিন। একুশে ফেব্রুয়ারির এক আর শুধু আমাদের মাতৃভাষা দিবস নয়। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বে পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এর তাৎপর্য উল্লেখ করে বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী ডক্টর হুমায়ুন আজাদ বলেছেন,
’আমি মুগ্ধ আমি প্রীতি, আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, আমার প্রাণের কথা আমার ভাষায় জানাতে পারব বলে আমার হৃদয় স্পন্দন বেড়েছে। সত্যি গর্বিত আমি।’


বাহানোর মাতৃভাষা আন্দোলনের উজ্জ্বল স্মৃতি বিজড়িত দিন একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের এক রক্তাক্ত ইতিহাস। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির চেয়ে ইতিহাসের সূচনা হয়েছিল তা বিশ্ব সভায় স্বীকৃতি পেয়েছে ১৯৯৯ সালে প্রায় ৪৭ বছর পর।

1953 সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পালন করি কিন্তু ২০০০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বের চোখে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে। এই গ্রুপের অংশীদার এখন প্রতিটি বাঙালি। আর এই বাঙালি জাতীয় জীবনে একুশে চেতনা এখনো উজ্জ্বলা মান।

ভাষা আন্দোলনের আদি কথাঃ পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বমুহূর্তেই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন উপ চর্চা ডঃ জিয়াউদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পূর্ববঙ্গ থেকে ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এই প্রস্তাবের ঘড় বিরোধিতা করেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন (১১ শ্রাবণ ১৩৫৪ বঙ্গাব্দ) এভাবেই ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।

বাংলা ভাষার প্রতি অবজ্ঞা ও অবহেলাঃ এদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তান সৃষ্টির শুরু থেকে উর্দুকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার হীন চক্রান্ত চালাতে থাকে। ১৯৪৮ সালের রেসকোর্স ময়দানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহু ঘোষণা করেন উর্দু এবং উর্দু হয়ে পাকিস্তান একমাত্র রাষ্ঠ ভাষা। এর কিছুদিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্জন হল এর এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহু তার ঘোষণার পুনাবৃত্তি করলে তুমুল প্রতি ধনী উচ্চারিত হয়।

ভাষা আন্দোলনঃ ১৯৪৮ সালের ঘোষণার পর থেকেই বাংলা ভাষার আন্দোলনে জোরদার হতে থাকে, পশ্চিম পাকিস্তান ডিরেক্টর যতই বাংলা ভাষার বিরোধিতা করতে থাকে বাংলা ভাষার আন্দোলন ততই জোরদার হয়। প্রাথমিকভাবে ছাত্ররা এই আন্দোলন চালিয়ে নিলেও পরবর্তী সময়ে গোটা দেশবাসী ছাত্রদের সাথে একান্ত ঘোষণা করে। দেশবাসী জোরালো সমর্থনে ছাত্রদের মনোবল আরো বেড়ে যায়, তারা দ্বিগুণ উৎসাহে সম্মুখ পানে একাগ্রতে থাকে।

একুশের স্মৃতিঃ ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন কে সামনে রেখে সমগ্র দেশে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন জোরদার করা হয়। পাকিস্তান শাসক ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সকল প্রকার মিটিং মিছিল ও সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা নেই প্রত্যয়ী ছাত্রসমাজ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে।

সাথে সাথে পুলিশ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালাই। এতে সালাম বরকত রফিক ও জব্যাসহ অনেকে নিহত হয়। এ হত্যাযোগ্য ও দমননীতির ফলে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। বাহান্নোর ভাষা আন্দোলনের দেশের কবি সমাজকে করেছে তুমুল আলোরিত।

অনেক কবি ও অসংখ্য কবিতার মাধ্যমে এই ভাষা আন্দোলনকে করেছে বেগবান।’৫২ এর ভাষা আন্দোলনের প্রভাবে কবি শামসুল রহমান রচনা করেছেন, ’বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা নামক বিখ্যাত কবিতাটি-

’তোমাকে উপরে নিলে, বলবো তবে কি থাকে আমার?
১৯৫২ দারুণ সগৌবে মহীয়সী।,

রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষার স্বীকৃতিঃ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত মর্ম যান্ত্রিক হত্যাকাণ্ডের খবর সারা দেশে বিদ্যুৎ বেগে পৌঁছে যায় এবং দেশবাসী প্রচন্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। অতঃপর পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। 1956 সালের সংবিধানের সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিঃ একুশে ফেব্রুয়ারি এখনো আর শুধু আমাদের মাতৃভাষা দিবস নয়। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। ১৯৯৯ সালে ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিক (ইউনেস্কো) এর সাধারণ পরিষদের ৩০ তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বাংলাদেশ ২৭টি দেশের সমর্থন নিয়ে সমর্থকভাবে ’একুশে ফেব্রুয়ারিকে ’আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।

ইউনেস্কোর প্রস্তাবে বলা হয়, “১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা জন্য বাংলাদেশের অন্যান্য ত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ এবং ১৯৫২ সালের এই দিনের শহীদদের স্মৃতিকে সারা বিশ্বের স্মরণীয় করে রাখতে একুশে ফেব্রুয়ারিকে ’আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কো ১২৫ টি সদস্য দেশ এবং ইউনেস্কোর সদর দপ্তরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হবে।

ইউনেস্কোর এই ঘোষণার মধ্যে দিয়ে বিশ্বের প্রায় ৫০ হাজার ভাষা সম্মানিত হল এবং একবিংশ শতাব্দীর তথা ২ সহস্রাব্দ অর্থাৎ ২০০০ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বব্যাপী প্রথম পালিত হলো ’আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। ইউনেস্কোর এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রায় ৫ হাজার ভাষা সম্মিলিত হলো এবং একবিংশ শতাব্দীর অর্থাৎ ২০০১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে সারা বিশ্বব্যাপী প্রথম পালিত হয়েছিল ’আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।’

অধিকার চেতনাঃ ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির মধ্যে যে চেতনার উন্মেষ হয়, তার চরম বিস্ফোরণ ঘটে ১৯৬৯ থেকে ৭১। একুশে ফেব্রুয়ারি তাৎপর্য শহীদ দিবস পালনের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; তা বাঙালির জাতীয় জীবনের সর্বত্র প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের সমস্ত আন্দোলনের মূল চেতনা একুশে ফেব্রুয়ারি।

তখন থেকেই বাঙালি উপলব্ধি করেছিল তার বাঙালি জাতীয়তাবোধ, তার সংস্কৃতির অতন্ত্র প্রহরী। এই সংগ্রামের চেতনায় বাংলার সংস্কৃতিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের দুই ধারকে এক সূত্রে গ্রথিত করে মুক্তি সংগ্রামের মোহনায় এনে দিয়েছে। আর এর পরিপেক্ষিতেই ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্যঃ ভাষায় একটি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। আর এই সংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের ভাষা হচ্ছে শক্তিশালী হাতিয়ার। মাতৃভাষা প্রচলন কেবল ভাষাগত বৈচিত্র, বহু ভাষা ভিত্তিক শিক্ষাকেই উৎসাহিত করবেনা। তা ভাষাগত ও সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়ন ও অনুবাদের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য হলো-সকল মাতৃভাষাকে বিকাশিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া। যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা, দুর্বল বলে কোন ভাষার ও উপর প্রভূক্ত আরবের অপচেষ্টা না করা, ছোট-বড় সকল ভাষার প্রতি সম্মান মর্যাদা প্রদর্শন।

এ দিবসে প্রত্যেক পাশাপাশি মানুষ নিজের মাতৃভাষাকে যেমন ভালোবাসে তেমনি অন্য জাতির মাতৃভাষা কেউ মর্যাদা দেবে। এভাবে একুশ কে চেতনায় ধারণা করে মাতৃভাষা কে ভালোবাসার প্রেরণা পাবে মানুষ।

বাঙালি জাতি নিজের রক্ত দিয়ে সারা বিশ্বকে শিখিয়ে দিয়ে গেল ভাষাকে ভালোবাসার মন্ত্র। মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য লুকিয়ে আছে দেশকে ভালোবাসা, দেশের মানুষকে, দেশের সংস্কৃতিকে ভালোবাসা, তার জীবন চারকে ভালোবাসা আর তার জন্য গর্ববোধ করা।

ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটঃ ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ প্রতিষ্ঠিত হলে পাকিস্তানের দুই অংশ ”পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান” মিলে একটি দেশ হয়। কিন্তু ধর্মীয় মিল থাকলেও ভাষাগত পার্থক্যের কারণে দুই দেশের মধ্যে আদর্শগত কোন জোকসূত্র ছিল না। এমত অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার গণতান্ত্রিক ও অন্যায় মূলক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পূর্ববাংলা যে আন্দোলন গড়ে ওঠে তাকে তিনটি পর্যায় বিভক্ত করে দেখানো যায়ঃ

প্রথম পর্যায়েঃ নভেম্বরের ১৯৪৭ সালে করাচিতে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সম্মেলনে উদ্যোগে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এর প্রতিবাদে পূর্ব বাংলায় সর্বপ্রথম রাষ্ট্রভাষা সংক্রাম প্রতিবাদ গঠন করা হয়। এ পরিষদের দাবি ছিল দুটিঃ

১. ভালোবাসা হবে পূর্ব বাংলার একমাত্র শিক্ষার ভ্রমণ এবং অফিস আদালতের প্রধান মাধ্যম।
২. পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে দুটিঃ ক. বাংলা ও খ. উর্দু।

দ্বিতীয় পর্যায়ঃ ১৯৪৮ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কংগ্রেস দলিল সদস্যগণ বিশেষত কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ তত্ত্ব ইংরেজি উত্তর পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি জানান। কিন্তু পাকিস্তানের প্রধান প্রধানমন্ত্রী লেখত আলী খান এ দাবির বিরোধিতা করেন। এ অবস্থায় সাথে ফেব্রুয়ারি সর্বত্র ধর্মঘট পালিত হয়। এভাবে সংগ্রাম পরিষদ 15ই মার্চ পর্যন্ত ধর্মঘট ও হরতাল পালনের মাধ্যমে আন্দোলন অব্যাহত রাখে।


অবশেষে খাজা নাজিম উদ্দিন আব্বাস দিলে আন্দোলন প্রশমিত হয়। কিন্তু ১৯৪৮ সালের ২১ শে মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহু রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় এবং কর্জন হলের এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উড়তে হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দিলে আন্দোলন পুনরায় চাঙ্গা হয়।

শেষ পর্যায়েঃ পরবর্তীতে ১৯৫০ সালে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এবং ১৯৫২ সালের ২৬ শে জানুয়ারি খাজি নাজিম উদ্দিন রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দিলে ছাত্র বুদ্ধিজীবী মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়। ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। ঐদিন ধর্মঘট শেষে আয়োজিত এক জনসভায় ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রামের কমিটি’গঠন করা হয়।

এতে একুশে ফেব্রুয়ারিকে ভাষা দিবস হিসেবে পালন করা এবং দেশব্যাপী হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একুশ ফেব্রুয়ারির উক্ত কর্মসূচি পন্ড করার জন্য তৎকালীন গভর্নর নজরুল আমিন ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।


কিন্তু সংগ্রাম পরিষদে এ আইন অমান্য করে মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র জনতার এক মারাত্মক সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে পুলিশ মিছিলে গুলি চালায় সালাম রফিক বরকত জব্বার নাম না জানা অনেকেই প্রাণ হারান এবং আহত হন বহুসংখ্যক।

এর প্রতিবাদী তিন দিন একটানা হরতাল পালিত হয়। অফিসে ১৯৫৬ সালের সংবিধানের ২১৪ নং অনুচ্ছেদে তাহলে কে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়।

জাতীয় চেতনার বহিঃপ্রকাশঃ রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে এদেশের মানুষকে সচেতন করে তোলে। ফলে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয় লাভ করে। তাছাড়া অন ৯৬৯ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান ১৭ সালের নির্বাচন আম্লীগ লীগের ছয় লাভের পেছনে শক্তি ও প্রেরণা যুগিয়ে ছিল ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। সর্বশেষ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ একুশে চেতনা চূড়ান্ত রূপ।

জাতীয় জীবনে একুশের চেতনাঃ আমাদের বাংলাদেশের প্রতিটি ইতিহাস এই মিছে আছে একুশের চেতনা। ফলে পৃথিবীর বুকে এসে তার স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তবে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এখনো আসেনি। আর এজন্যই প্রয়োজন আরেকটা ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন। একুশের চেতনাকে বুকে ধারণ করতে পারলে কেবল তা সম্ভব। অথচ একুশে মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের উদাসীনতা প্রবল।

বাংলা ভাষা চর্চার সুযোগ কেমন যেন কমে যাচ্ছে। সবাই বাংলাকে বাদ দিয়ে বিদেশি ভাষা নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের বলার মাধ্যম ও বহু বিদেশি ভাষা ঠাই নিয়েছে। অথচ আমাদের ভাষা আমাদের অহংকার। কেননা সমগ্র বিশ্বে আমরাই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। সুতরাং আমাদের চেতনাকে জাগাতে হবে।

উপসংহারঃ বাহান্নোর ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলা জনগণের মধ্যে এক নতুন জাতীয় চেতনা উন্মোচন ঘটায় এবং চেতনায় ক্রমিক্রমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ও বিকাশ ঘটায়। ফলে এ জাতি লাভ করে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিজয়, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের স্বাধিকার আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যর্থন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় লাভ। অর্থাৎ ভাষা আন্দোলনে ধাপে ধাপে পরবর্তী সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করেছে।


বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি বিজলিত একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে গৃহীত হওয়ায় ব্যাপারটি আমাদের তথা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। কারণ একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদার চেতনা লাভ করেছিল; লাভ করেছিল মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষা মর্যাদা দানের প্রেরণা এবং অনুভব করেছিল ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জনপ্রিয়তা।

লেখক এর মন্তব্য - আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা

বাঙালি জাতির কাছে গর্বের, চির স্মরণীয় একটি দিন একুশে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের চেতনা ফলেই পরবর্তীতে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই আমাদের সকলের উচিত এই তিনটি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা এবং একুশের চেতনা উদ্বুদ্ধ হওয়া।

আপনি যদি উপরোক্ত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনাটি সম্পূর্ণ ভালোভাবে পড়ে পৌঁছে যেকোনো পরীক্ষায় যদি আসে এ রচনাটি তারপর যদি আপনি লেখেন ঠিক উপরোক্ত যেভাবে লেখা হয়েছে সেভাবে তাহলে আপনি পরীক্ষার খাতায় সর্বোচ্চ মার্ক পেতে পারেন।

এ বিষয়ে যদি আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কারণ আমরা প্রত্যেকের কমেন্টের রিভিউ করি। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে অবশ্যই আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করতে হবে এর কারণ আমরা প্রতিদিন নতুন নতুন শিক্ষামূলক তথ্য এবং সব ধরনের তথ্য আপডেট করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Anonymous
    Anonymous March 14, 2024 at 9:43 AM

    very nice information, Thank you

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইভিভিটিভি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url