এ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম - বাংলা এ ধ্বনির উচ্চারণের নিয়ম
আপনাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা বাংলা এ ধ্বনির উচ্চারণের নিয়ম জানেন না। তাদের উপকারার্থে আমি এই আর্টিকেলটি তৈরি করেছি। আমি এ নিবন্ধনটির মাধ্যমে এ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম খুব সহজভাবে ব্যাখ্যা করব। আপনি নিম্নলিখিত এ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম দেখে আপনি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ হবেন।
আপনি যদি সহজে ভাষায় এবং খুব সহজেই এ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম জেনে বাংলা এ ধরনের উচ্চারণের নিয়ম অভিজ্ঞ হয়ে উঠতে চান তাহলে এই নিবন্ধনটি মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ পড়ুন।
পেজ সূচিপত্রঃ এ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম
ইভিভিটিভি
বাংলা উচ্চারণ রীতি
মানুষ মনের ভাব প্রকাশের বাহন হিসাবে ভাষা ব্যবহার করে। ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনিসমূহের উচ্চারণ ও পদ্মবিন্যাস সুগঠিত ও সুশৃংখল না হলে ভাষা সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারে না। তাছাড়া ভাষার দুটি রূপ আছে। যথা: লৈখিক ও বচনিক। রৈখিক রূপটি সকলের কাছে দৃশ্যমান হয়।
কিন্তু বচনের রূপটির দৃষ্টিগ্রাহনা। এটি শ্রুতি নির্ভর। ভাষার বাচনিক শুদ্ধতা ও সৌন্দর্য বজায় রাখতে হলে শুদ্ধ উচ্চারণ অপরিহার্য। প্রতিটি ভাষার মতো বাংলা ভাষার সুনির্দিষ্ট উচ্চারণ রীতি আছে।
আর পড়ুনঃ শীতের সকাল অনুচ্ছেদ
শুদ্ধ উচ্চারণের প্রয়োজনীয়তা
শুদ্ধ উচ্চারণ একটি ভাষার অপরিহার্য উপাদান ও সৌন্দর্য। নিচে এর প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো। যথা
- শুদ্ধ উচ্চারণ ছাড়া অর্থ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়।
- সঠিক মনোভাব প্রকাশে শুদ্ধ উচ্চারণের প্রয়োজন।
- আঞ্চলিক দোষ পরিহার করার জন্য।
- প্রতিটি ধনীর আলাদা উচ্চারণ আ জানা ও মধুর্য সম্পর্ক জ্ঞানের জন।
- প্রতিনিয়ত উচ্চারণ অনুশীলনের মাধ্যমে পরিপূর্ণ উপভাষা চর্চা করা।
- প্রমিত বচন ভঙ্গিতে কথা বলা।
- ভাষার শ্রুতি সৌন্দর্য বজায় রাখা।
এই ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম।
এ: এ-কারের উচ্চারণ দু’ প্রকার। যেমনঃ ১. প্রকৃত ও ২. বিকৃত। ’এ’উচ্চারণের নিয়ম নিচে আলোচনা করা হলো।
’এ’ উচ্চারণের নিয়ম
’এ’ নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, বর্ণ একটি কিন্তু ধনী দুটি; যেমন: ‘এ’ এবং ‘এ্যা’। ‘এ’ ধনী উচ্চারণের চূড়ান্ত কোন নিয়ম নেই। রবীন্দ্রনাথ সংগীতে এ কার রক্ষিত, কিন্তু বাংলা ভাষার মূল প্রবণতা ‘এ্যা’উচ্চারণে। ‘এ’ ব্যবহারের যতটা নিয়ম করা হয়েছে তা নিচে আলোচিত হলো।
১. এ-কারের ই,উ, এ থাকলে ‘এ’উচ্চারিত হয়। যেমনঃ দেখি, দেখুন, একটু, একটি ইত্যাদি। বাক্য: এ যে মেয়ে সেজে এসেছে।
২. এ-কারের পর অ, আ থাকলে ‘এ’ স্থলে এ্যা হয়। যেমন: একটি ( এ্যাকটা ). লেংড়া (ল্যোংড়া), টেংরা (ট্যাংরা) ইত্যাদি।
৩. ধাতু কিংবা প্রাতিপদিক (শব্দের মূল) ই, ঋ ছিলো কিন্তু ধ্বনির প্রভাবে ই বা ঋ ছিলো কিন্তু ধ্বনির প্রভাবে ই , ঋ ছিল কিন্তু ধনীর প্রভাবে ই বা ঋ স্থলে ’এ’ হয়েছে, সেক্ষেত্রে এ অপরিবর্তিত এ > এ থাকে। যেমন: লেখা, মেলা ইত্যাদি।
বাক্য - বেলা সেনগুটপ্ত বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে বলল আর বেলা নেই। ( সর্বত্র অ্যা ) আরবি - জিলা > জেলা, এলাকা, কেতাব ইত্যাদি।
ফার্সি - মেজাজ (এ), সেতার, বেতার বেয়াদব, বেতমিজ, এনামুল, এনাম, মেরাজ ইত্যাদি।
সংস্কৃত - দিশ > দেশ, বিদ > বেদ মিদ > মেদ ইত্যাদি।
বাংলা - গিলা > গেলা, (এ) - খাওয়া অর্থের গেলা (অ্যা) - যাওয়া অর্থে।
ঋ - নৃপাল > নেপাল ( নৃ - মানুষ কে পালন )।
১. এ-কারের প্রকৃত উচ্চারণ
ক, পদের অন্তে ‘এ’ থাকলে ‘এ’যথাযথভাবে উচ্চারিত হয়; যেমন: পথে, লোভে, মিছে, রাতে, দিনে ইত্যাদি।
খ. তৎসম শব্দের আদিতে ‘এ’ ধব্বনি থাকলে। এ-র উচ্চারণ স্বাভাবিক হয়। যেমনঃ প্রেম, রেখা, শেষ, দেশ ইত্যাদি।
গ, ই-কার বা উ-কারের পূর্বে এ ধ্বনি থাকলে এ-ধ্বনি স্বাভাবিকভাবে উচ্চারিত হয়। যেমনঃ ফেরি. দেরী. বেণু. রেণুু ধেনু ইত্যাদি।
ঘ. যুক্তধ্বনি বা হ-এর পূর্বে এ-ধ্বনি থাকলে এ-র উচ্চারণ স্বাভাবিক হয়। যেমনঃ কেষ্ট, দেহ, কেহ ইত্যাদি।
২. এ-ধ্বনির বিকৃত উচ্চরণ:
ক. খাঁটি বাংলা শব্দে ‘এ’-ধনীর উচ্চারণ বিকৃত হয়। যেমন: তেলাপোকা ( ত্যালাপোকা ), ভেপসা ( ভ্যাপসা ), দেওর ( দ্যাওর ) ইত্যাদি।
খ. দু’অক্ষর বিশিষ্ট সর্বনাম ও অব্যয় পদে ‘এ’ ধ্বনি ‘অ্যা’-এর মতো উচ্চারিত হয়। যেমনঃ এতো (অ্যাতো). এখন ( অ্যাখোন), ইত্যাদি।
গ, চন্দ্রবিন্দু (ঁ) ও অনুস্বারের ( ং ) পূর্বে এ-ধ্বনি থাকলে তা বিকৃত উচ্চারণ হয়। যেমনঃ খেঃড়া ( খ্যাংড়া ), লেংড়া ( ল্যাংড়া ), চেংড়া ( চ্যাংড়া ) গেজেল ( গ্যাজেল ) ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ গ্রন্থগত বিদ্যা ভাব সম্প্রসারণ
ঐ: এটি যৌগিক স্বর বা সন্ধ্যাক্ষর। এর উচ্চারণ ‘এই’ বা ওই-এর মতো। যেমন: চৈতন্য, খৈ ইত্যাদি।
ও: সাধারণ বাংলা ও-কারের কোন বিকৃত উচ্চারণ নেই।
ঔ: এটি যৌগিক স্বর। এর উচ্চারণ ‘ওউ) বা ‘অউ’ -এর মতো। যেমন: যৌবন. মৌ, ঔষধ ইত্যাদি।
লেখকের মন্তব্য
আপনাদের প্রত্যেকের জানা উচিত উচ্চারণ সম্পর্কে উচ্চারণের সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আমরা এতক্ষণ জানলাম এ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম বাংলা এ ধ্বনি উচ্চারণের নিয়মগুলি খুবই সহজ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করবেন। এ বিষয়ে যদি আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কারণ আমরা প্রত্যেকের কমেন্ট রিপি করি। আমাদের সঙ্গে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর তথ্য