বিবর্তনবাদ কি - বিবর্তনবাদের সংজ্ঞা দাও
বিবর্তনবাদ কি বা বিবর্তনবাদের সংজ্ঞা দাও আপনি কি এ বিষয়ে জানতে চান? যদি আপনি বিবর্তনবাদ কি এই বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে এই পুরো পোস্টটির মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে বিবর্তনবাদ কি এবং বিবর্তনবাদের সংজ্ঞা।
আপনি যদি ব্লগ পোষ্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন বিবর্তনবাদ কি এবং বিবর্তনবাদের সংজ্ঞা।
বিবর্তনবাদ কি অথবা বিবর্তনবাদের সংজ্ঞা দাও
উত্তর : ভূমিকাঃ এই জগতের যে বিষয়টি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা হলো এই জগত এবং জগতের সবকিছুর নিয়ত পরিবর্তন। জগতের এই পরিবর্তন লক্ষ্য করে গ্রিক দার্শনিক হিরাক্লিটাস পরিবর্তনকে এই জগতের একমাত্র সত্য বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু শুধু পরিবর্তনেই নয় শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবর্তনই জগতের ধর্ম। এই শৃঙ্খলা ধর্ম পরিবর্তনকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অভিব্যক্তিবাদ বা পরিবর্তনবাদের উদ্ভব।
উৎপত্তিগত অর্থে বিবর্তনবাদঃ বিবর্তন হল ইংরেজি 'Evolution' শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ। ব্যুৎপত্তিগতভাবে মেলে ধরা। জগত সম্পর্কে পরিবর্তন বাদের যে বক্তব্য তার সাথে এ শাব্দিক অর্থের পূর্ণ সামঞ্জস্য আছে। যা প্রকাশিত, ধীর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে তার ক্রমবিকাশই হলো বিবর্তন।
বিবর্তনবাদঃ বিবর্তনবাদ অনুসারে এ জগতের যাবতীয় বস্তু সহজসরল ব্যবস্থা থেকে ধীর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন স্ত হয়েছে। এই জগত ও জগতের যাবতীয় বস্তু বর্তমান যে অবস্থায় আছে তা কোন বপ্লবিক বা আ কসমিক ঘটনা নয় বরং এ হচ্ছে ১ ক্রম পরিবর্তন যার ধারাবাহিক পরিবর্তনের ফল বা পরিণতি। কোন কিছুই হঠাৎ সৃষ্টি হয়নি।
বিবর্তনবাদ অনুসারে ক্রমবিকাশ সরল থেকে জটিল সমজাতীয় থেকে ভিন্ন জাতীয় বিশৃঙ্খলা থেকে সুশৃঙ্খলা অবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, কোন বস্ত তার অন্তর্নিহিত শক্তির বা নিয়মের ক্রিয়ার ফলে ক্রমিক এবং সুশৃংখল পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যখন সরল থেকে জটিল অবস্থায় পরিবর্তিত হয় তখন সে ক্রমবিকাশের প্রক্রিয়া বা পদ্ধতিকে বিবর্তনবাদ বা অভিব্যক্তিবাদ বলে।
প্রমাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্নভাবে পরিবর্তন বাদের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাদের কয়েকটি সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো:
পশ্চাত্য দর্শনের জনক থেলিস বলেছেন, “ এ জগতে পানির সৃষ্টি।” তার বক্তব্যের মধ্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, পানি থেকে রূপান্তরের মাধ্যমেই পৃথিবীর তার বর্তমান রূপ পেয়েছে।
এনাক্সিমেন্ডারের মতে. “ আদিতে মানুষ মাছের মতো পানিতে বাস করত। দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থাকার পর সে যখন আত্মরক্ষার জন্য উপযুক্ত হলো তখন সে হঠাৎ একদিন নিক্ষিপ্ত হলো সমুদ্র তীরের এবং তাতে করেই সুযোগ ভূমন্ডলের স্থল থাকে বসতি স্থাপনের জন্য।”
হিরাক্লিটাসের মতে, “সবকিছূ নিয়ত বিকাশমান।”
এস্পিডক্লিসের মতে, “প্রমাণের গতিবিধি অপূর্ণ অবস্থায় থেকে অপেক্ষাকৃত পূর্ণ অবস্থায় অভিমুখে।
উপসংহারঃ উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিবর্তনবাদ বলতে আমরা সে মতবাদকে বুঝি, যে মতবাদ অনুসারে এ জগত হঠাৎ করে কারো আদেশে সৃষ্টি হয়নি, বরং ধীরে ধীরে ক্রমবিকাশের মাধ্যমে বর্তমান অবস্থায় এসে উপনীত হয়েছে। সুতরাং বিবর্তনবাদ অনুসারে ক্রম পরিবর্তনের জগতের রীতি ও প্রধান বৈশিষ্ট্য।
লেখকের মন্তব্য
আপনারা যদি উপরোক্ত সম্পন্ন কিছু ভালোভাবে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন বিবর্তনবাদ কি এবং বিবর্তনবাদের সংজ্ঞা দেও এই সম্পূর্ণ বিষয়টি। এই বিষয়ে যদি আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কারণ আমরা প্রত্যেকের কমেন্ট রিভিউ করি। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। (প্রকাশনা: দিকদর্শন প্রকাশনী লিঃ)
ইভিভিটিভি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url