সুন্দরবন রচনা চাকরি এবং সকল শ্রেণীর জন্য

আপনি হয়তো সুন্দরবন রচনা সম্পর্কে জানতে চান এই কারণে আপনি আমাদের এই নিবন্ধন টি ওপেন করছেন এবং পড়তে শুরু করেছেন। আপনি এই নিবন্ধনটির মাধ্যমে জানতে পারবেন সুন্দরবন রচনা সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীর জন্য এবং যারা চাকরির পরীক্ষার জন্য পড়তে চান তাদের জন্য উপকারী হতে চলেছে এই নিবন্ধনটি।
সুন্দরবন রচনা
সুন্দরবন রচনা নিয়ে একটি সহজ এবং তথ্যপূর্ণ রচনা যা সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীর জন্য উপকারী। এবং যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চান তাদের জন্য খুবই সাহায্যকারী রচনা হতে পারে এটি।

সূচিপত্রঃ সুন্দরবন রচনা চাকরি এবং সকল শ্রেণীর জন্য

ইভিভিটিভি

ভূমিকা

সুন্দরবন যা পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল হিসেবে পরিচিত, বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবন। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ বৈচিত্র্য এবং পরিবেশের সংরক্ষণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ হল এখানে বসবাসকারী বাঘ হরিণ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মাছ এবং অন্যান্য জীবজন্তু।

এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঘের বাসস্থান হিসেবেও পরিচিত। বাংলাদেশি পৃথিবীর অন্যতম বনাঞ্চল। এই কারণে এই নিবন্ধনটি প্রায় অনেক শ্রেণীর পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষাও আসতে পারে। এই কারণে আমরা আপনাদের উপকারে আমরা আপনাদের কথা চিন্তা করে আজকের এই নিবন্ধনটি তৈরি করেছি।

নিবন্ধনটি খুব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে আপনাদের জন্য যাতে করে আপনারা বিষয়টি খুব ভালোভাবে বুঝতে পারেন এবং এ বিষয়ে পরীক্ষায় লিখতে পারেন। তো চলুন বেশি দেরি না করে সুন্দরবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। নিম্নলিখিত সুন্দরবন রচনাটি আপনার সর্বোচ্চ মার্ক নিশ্চিত করবে।

সুন্দরবন রচনা

সুন্দরবন
ভূমিকা: সুন্দরবন পৃথিবীর একক এবং বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ বন। এ বোনের ৬২ শতাংশ বাংলাদেশের খুলনা জেলায় এবং বাকি ৩৮ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণ জেলায় অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সুন্দরবন তুলনীয় এবং বৈচিত্রের অসাধারণ। সুন্দরবন একটি একক ইকো সিস্টেম। এটি শুধু বাংলাদেশের নয় বিশ্বের প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছেও এটি আকর্ষণীয় স্থান।

সুন্দরবনের আয়তন ও অবস্থান: আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর পূর্বে সুন্দরবন ১৬৭০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ভেবে বিস্তৃত ছিল। কিন্তু বর্তমানে এর আয়তন সংকুচিত হয়ে গেছে। বর্তমানে এ বনভূমির আয়তন ৬০১৭ বর্গ কিলোমিটার। সমস্ত সুন্দরবন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।

সুন্দরবনের, ভূতত্ত্ব, মৃত্তিকা উজ্জলবায়ু: সুন্দরবনের বৌভাত হিমালয় পর্বতের ভূমিক্ষয় জনিত জমা পুলি থেকে সৃষ্টি। ভূ-বিজ্ঞানীরা এখনকার ভূমির গঠন বিন্যাসে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সামান্য ঢালের সন্ধান পেয়েছেন।কূপ খনন গবেষণা থেকে দেখা যায়, সুন্দরবনের পশ্চিম এলাকা তুলনামূলক স্থির।

তবে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি অংশ ক্রমে নিম্নমুখী হচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরের তুলনায় সুন্দরবনের মাটি একটু আলাদা ধরনের। জোয়ার ভাটার কারণে এখানকার পানিতে জল বদ্ধতা ও লবণাক্ততা বেশি। এখানকার মাটি পরী যুক্ত দোওয়াশ।

সুন্দরবনের উদ্ভিদ: সুন্দরবনের উদ্ভিদকুল বৈচিত্র্যময়। এখনকার অধিকাংশ গাছপালা ম্যানগ্রোভ ধরনের। এখানে রয়েছে বৃক্ষ, লতাগুল্ম, ঘাস, পরগাছা ইত্যাদি উদ্ভিদ। উদ্ভিদবিজ্ঞানী ডিপ্রাইন সুন্দরবনের ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে বলে উল্লেখ করেছেন।

পৃথিবীতে এ পর্যন্ত সন্ধানপত্র ৫০টি ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের মধ্যে সুন্দরবনে আছে ৩৫টি। সুন্দরবনের উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে সুন্দরী গড়ান দেওয়া কেওড়া পশুর প্রকৃতি। এছাড়া সুন্দরবনের প্রায় সবখানেই জন্মে গোলপাতা।

সুন্দরবনের প্রাণী: বৈচিত্র সব প্রাণীর বাস সুন্দরবনের। এখানে রয়েছে বহু প্রজাতির স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভয়চর প্রাণী এবং শত শত প্রজাতির পাখি ও মাছ। সুন্দরবনের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার পৃথিবী বিখ্যাত।

এছাড়া রয়েছে চিত্রা ও মায়া হরিণ, বানর, বন বিড়াল, লিওপার্ড, শজারু, উদ এবং বন্য শুকর। এখানে রয়েছে বিচিত্র সব পাখি। বুক, সারস, হাড়গিলা, কাদাখোঁচা, লেনজা ও হহিউটি এখান কার নদি-নালা ও গাঝ পালা মাঝে বসবাস করে।


সুন্দরবন উপকূলে দেখা যায় গাংচিল, জল কবুতর, টার্ন ইত্যাদি। এছাড়াও চিল, ঈগল, শকুন, মাছরাঙ্গা, কাঠঠোকরা, ভগীরথ, পেঁচা, মধুপায়ী, বুলবুলি, শালিক,ফিঙে, ঘুঘু, বেনে বৌ, হাঁড়িচাচা, ফুলঝুরি, মুনিয়া, টুনটুনি, দোয়েল, বাবুই প্রকৃতি পাখি সুন্দরবন বাস করে। সুন্দরবনকে সরীসৃপদের মধ্যে রয়েছে কুমির সাপ টিকটিকি জাতীয় সরীসৃপ ইত্যাদি।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুন্দরবনের অবস্থান: সুন্দরবন এ প্রাপ্ত কাঠ জ্বালানি ও কাঠ কয়লা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ম্যানগ্রোভের ফল গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গোলপাতা শুকিয়ে ঘাড়ের চাল ও বেড়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। সুন্দরবনে যে শামুক ঝিনুক পাওয়া যায়, তা খাবার চুনের ভালো উৎস। সুন্দরবনের মধুর উপর নির্ভর করে একশ্রেণীর মানুষের তাদের জীবিকা নির্বাহ করে।

দেশে বিক্রয়ের পাশাপাশি তা মধু বিদেশেও রপ্তানি হয়। সুন্দরবন থেকে মাছ ধরে তার স্থানীয় বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করে। কেন্দ্র করে কয়েকটি শিল্প কর্মকারখানা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে খুলনা নিউজ প্রিন্ট ও হার্ডবোর্ড মিলস উল্লেখযোগ্য।

বর্তমানে সুন্দরবনের অবস্থা:সুন্দরবনের বনজ সম্পদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মানুষ অহরহ প্রবেশ করছেন এখানে। ফলে এর ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

এছাড়া লবণাক্ত বৃদ্ধি পেয়ে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের শেষ আবাসস্থল সুন্দরবন। চোরা শিকারীদের হামলায় বাঘের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক আইলায় সুন্দরবন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

উপসংহার: সুন্দরবন আমাদের ঐতিহ্য। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মানুষের আর্থসামাজিক ব্যবস্থানকে উন্নত করতে সুন্দরবনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। তাই আমাদের উচিত সুন্দরবন ও এর প্রকৃতিক সম্পদ রক্ষায় নিজে নিজে অবস্থান থেকে উদ্যোগী হওয়া।

সুন্দরবন শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা জীব বৈচিত্রের দিক থেকে গুরুত্ব নয়, এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতির পরিচয় ও অংশ। সুন্দরবনের সংরক্ষণে সচেতন বাড়ানো এবং এর গুরুত্ব অনুধাবন করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সঠিক জন্য এই রচনাটি অবশ্যই সহায়ক।

সুন্দরবন সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্ন এবং উত্তর

নিম্নলিখিত সুন্দরবন সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠকদের উপকার থেকে তুলে ধরা হয়েছে। যাতে করে পাঠকদের মনে এ সকল প্রশ্ন থাকলে তারা সহজেই এ বিষয়ে সমাধান পায় বা এই বিষয়ে জানতে পারে।
  • সুন্দরবন কি এবং এর গুরুত্ব কি?
সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। এর গুরুত্ব রয়েছে যে বৈচিত্র্য রক্ষা এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে।
  • সুন্দরবনে কি ধরনের প্রাণী পাওয়া যায়?
সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল, হরিণ এবং অসংখ্য পাখি মাছের প্রজাতি পাওয়া যায়।
  • সুন্দরবনের ভৌগোলিক অবস্থান কোথায়?
সুন্দরবন বাংলাদেশ এবং ভারতের সীমান্ত জুড়ে বিস্তৃত যা বাংলাদেশের খুলনা সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত।
  • সুন্দরবনের জলবায়ু কেমন?
সুন্দরবনের জলবায়ু গ্রীষ্মকালীন ও লবণাক্ত পরিবেশ দ্বারা প্রবাহিত যা ম্যানগ্রোভ গাছের ভিত্তিতে সহায়ক।
  • সুন্দরবনের বনজ সম্পদের গুরুত্ব কি?
সুন্দরবনের ম্যানগ্রো বন কাঠ, মধু, মাছ, এবং লবণাক্ত উদ্ভিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যা স্থানীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে।
  • সুন্দরবন কেন ইউনেস্কোর বিশ্ব ইতিহাসের অংশ?
সুন্দরবন বৈচিত্র্যের প্রাচুর্য এবং পরিবেশগত গুরুত্বের কারণে ইউনেস্কো বিশ্বে ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
  • সুন্দরবন কেন পর্যটক এর কাছে আকর্ষণীয়?
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বাঘের উপস্থিতি, এবং সুন্দর পরিবেশ পর্যটকদের মনকে আকৃষ্ট করে।
  • সুন্দরবন কিভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়ক?
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ গাছ এবং বাসস্থান কার্বন শোষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
  • চাকরির পরীক্ষায় সুন্দরবন সম্পর্কিত প্রশ্ন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সুন্দরবন বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ হওয়ার একটি বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান এবং পরিবেশ বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রশ্নের অন্তর্ভুক্ত থাকে।

লেখকের মন্তব্য

এই সুন্দরবন রচনা বেশ কিছু তথ্য এবং প্রেক্ষাপট সংগ্রহ করা হয়েছে ক্যাম্পাস নিয়োগ সহায়িকা বই থেকে, যা প্রফেসর এফএম আব্দুল্লাহ আলিমের নিবন্ধিত একটি মূল্যবান গ্রন্থ এবং এটি ক্যাম্পাস প্রকাশনালী থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

বইটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের এবং চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অমূল্য একটি সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। এখানে সকল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে করে পাঠকরা সুন্দরবন সম্পর্কে আরও কপি ভাবে ধারণা পায়।

আপনি যদি উপরোক্ত এই সুন্দরবন রচনাটি ভালোভাবে পড়ে পরীক্ষায় লিখেন তাহলে খুব ভালো নাম্বার পেতে পারেন। এ নিবন্ধনটি আপনি আপনার পরিচিতি দের কাছে শেয়ার করুন যাতে করে তারা উপকৃত হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইভিভিটিভি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url